মমতাময়ী মা তার চার দিনের ছেলে শিশুকে নিয়েই নিজেকে বিসর্জন দিলেন! হা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের পুরাতন জেলরোড এলাকার একটি বেসরকারী হাসপাতালে প্রসূতির চিকিৎসা বিল নিয়ে তর্কাতর্কির জের ধরে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। ছাদ থেকে লাফ দিয়ে সীমা আক্তার (২৫) তার চারদিনের ছেলে শিশুকে নিয়েই শেষ পর্যন্ত আত্মহত্যা করেছেন।
শুক্রবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের পুরাতন জেল রোড এলাকার লাইফ কেয়ার হাসপাতালের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। সাধারণ মানুষ এ মর্মান্তিক ঘটনার সঠিক তদন্তের দাবি করেছেন। সেখানের পুলিশ বলছেন, হাসপতাল বিল নিয়ে হোক বা অন্য কোন কারণেই হোক এ ঘটনার তদন্ত হবেই।
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, সদর উপজেলার ঘাটিয়ার গ্রামের মনির মিয়ার স্ত্রী সীমা আক্তার ১৬ অক্টোবর সন্তান প্রসবের জন্য রাতন জেলরোড এলাকার লাইফ কেয়ার নামে একটি বেসরকারী হাসপাতালে ভর্তি হন। স্বামীর বাড়ির লোকজন তাকে সেই হাসপাতালে ভর্তি করায়। সেখানে তিনি একটি পুত্র সন্তান প্রসব করেন। তিন দিন ধরে তার চিকিৎসা চলছিল সেই হাস্পাতালে। শুক্রবার সকাল ১০টায় হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিল পরিশোধ নিয়ে বৃহস্পতিবার রাত থেকে তাকে উদ্বিগ্ন দেখাচ্ছিল। বিল নিয়ে তার মা রেহেনা বেগমের সঙ্গে তর্কাতর্কি হয়।
সকালে সাড়ে ৮টায় তার মা হাসপাতালের রুম থেকে নাস্তা আনার জন্য বের হয়। রুমে ফিরে দেখেন মেয়ে নেই। পরে অন্যান্য রোগীর স্বজনদের কাছ থেকে জানতে পারেন তার মেয়ে পার্শ্ববর্তী দি ল্যাব এইড ডায়গনস্টিক সেন্টার ও দি ল্যাব এইড স্পেশালাইজড হাসপাতালের ছাদ থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। প্রথমে চার দিনের নবজাতক ছেলে ও পরে সে নিজে পড়ে আত্মহত্যা করেন। লাইফ কেয়ার হাসপাতাল থেকে কিভাবে সে পার্শবর্তী হাসপাতাল ল্যাব এইড ডায়গনস্টিক হাসপাতালের ছাদে গেলেন তা কারও বোধগম্য নয়। গ্রামীণ এ নারী তো সে স্থান চেনেই না। তাহলে কি কেউ সীমাকে আত্মহত্যায় প্ররোচণা দিয়েছিল? নাকি তার সঙ্গে কি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিল নিয়ে দরকষাকষি করেছিল এমন প্রশ্ন এখন শহরের মানুষের মুখে মুখে।